কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ ১৯৫৪ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর তিনি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বড় হয়েছেন ঢাকায়। শৈশব থেকে বসবাস করছেন খিলগাঁওয়ের পৈতৃক বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারে। খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুল, নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটে তার শিৰাজীবন। ভূগোলে সম্মানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। শিক্ষা জীবনেই যুক্ত হন সাংবাদিকতাসহ গণমাধ্যমের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে। প্রায় আড়াই যুগের একনিষ্ঠ পথচলায় নিজেকে পরিণত করেন গণমাধ্যম ও কৃষি অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক অগ্রপথিক হিসেবে। যিনি গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষিক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছেন উন্নয়নের এক বিপ্লব। তার প্রচারণা সাফল্যে দেশে হাজার হাজার ক্ষুদ্র খামারি সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে প্রভূত উন্নয়ন। শাইখ সিরাজ বর্তমানে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড চ্যানেল আই'র পরিচালক ও বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত। শাইখ সিরাজ সত্তরের দশকের শেষ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত টেলিভিশনের মাধ্যমে এদেশের কৃষি উন্নয়নে অক্লান্ত ভূমিকা রেখে চলেছেন। তার উপস্থাপিত এক সময়ের বাংলাদেশ টেলিভিশনের 'মাটি ও মানুষ' এবং বর্তমানে চ্যানেল আই'র 'হৃদয়ে মাটি ও মানুষ', 'হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক' ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের 'কৃষি দিবানিশি' অনুষ্ঠান দেশে কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা, কৃষি কৌশল সম্পর্কে ধারণা পেঁৗছে দেয়ার মধ্য দিয়ে যার যাত্রা শুরু, পর্যায়ক্রমে তার এই কাজের পরিধি পেঁৗছে যায় বহুদূর। দেশের কৃষিশিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ এমনকি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কৃষি, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক নীতিনির্ধারণে শাইখ সিরাজ এক পথনির্দেশকের ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এক হিসেবে দেখা গেছে বিশ্ব টেলিভিশন মিডিয়ায় কোন গণমাধ্যম কমর্ী এত দীর্ঘ সময় ধরে কৃষি নিয়ে কাজ করেননি। সেই হিসেবে বিশ্বে শাইখ সিরাজের গণমাধ্যম কার্যক্রম একটি স্বাতন্ত্র্য ও একক দৃষ্টান্ত। যা তাকে পেঁৗছে দিয়েছে 'সান অব দ্য সয়েল', 'ফার্মার্স ভয়েস', 'কৃষক বন্ধু' ও 'ডাইনামিক টিভি পার্সোনালিটি'র উপাধিতে। জাতীয় পর্যায়ে সবচেয়ে কম বয়সে উন্নয়ন সাংবাদিকতায় পেয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার একুশে পদক (১৯৯৫)। এছাড়া পেয়েছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্ধশতাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার, পদক ও খেতাব। অর্জন করেছেন অশোকা ফেলোশিপ। উন্নয়ন সাংবাদিকতায় শাইখ সিরাজ এদেশে এক পথিকৃত। দীর্ঘ সাংবাদিকতা ও টেলিভিশন মাধ্যম পরিচালনায় তিনি সৃষ্টি করেছেন অনন্য নজির। শাইখ সিরাজের গণমাধ্যম কার্যক্রম এশিয়ার কৃষিনির্ভর দেশগুলোর কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিবেচনায়। ইতোমধ্যে তাকে নিয়ে রয়টার্স, এএফপি ও শ্রীলংকার ইয়াং এশিয়া টেলিভিশন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছে ও বিশ্বব্যাপী প্রচার চালিয়েছে। এদিকে শাইখ সিরাজের কৃষি উন্নয়ন ও গ্রামীণ উন্নয়ন বিষয়ক গণমাধ্যম কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় দেশের সব পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে কৃষিভিত্তিক কার্যক্রমের পরিধি বেড়েছে। তিনিই প্রথম চ্যানেল আইতে জাতীয় সংবাদে প্রতিদিনের কৃষি সংবাদ চালু করেন, যা এখন পর্যায়ক্রমে দেশের সব টেলিভিশনে চালু হয়েছে। গণমাধ্যমের এই আমূল সংস্কারের নেপথ্য নায়কও শাইখ সিরাজ। শাইখ সিরাজের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মৎস্য ম্যানুয়েল, মাটি ও মানুষের চাষবাস, ফার্মার্স ফাইল, মাটির কাছে মানুষের কাছে, বাংলাদেশের কৃষি : প্রেক্ষাপট ২০০৮, কৃষি ও গণমাধ্যম, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (সম্পাদিত) ইত্যাদি। ২০০৯ সনে তার ৫৫তম জন্মদিনে প্রকাশিত হয়েছে তার ওপর দেশের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের নিবন্ধের সঙ্কলন 'সান অব দ্য সয়েল'।
শাইখ সিরাজ
Info Post
0 comments:
Post a Comment