Breaking News
Loading...
Saturday, December 1, 2012

রিকার্সিভ ফাংশন তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা রোজসা পিটার বলেছেন, গণিতের মতো এত বিস্তৃত জগৎ আর কোনো ক্ষেত্র দিতে পারে না। মানবীয় আনন্দের মহত্তম জায়গা হচ্ছে গণিত।

রিকার্সিভ ফাংশন তত্ত্বের প্র্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গণিতবিদ রোজসা পিটার গণিতবিদদের মধ্যে পরিচিত হয়ে আছেন। রোজসা পিটারের মূল নাম হচ্ছে রোসা পলিটজার। ১৯৩০ সালে অনেক হাঙ্গেরীয়দের মতো তিনি তার নাম জার্মান রূপ থেকে হাঙ্গেরিয়ান ফর্মে নিয়ে যান। আধুনিক গণিতে তার বহুবিধ অবদান রয়েছে। নারী হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন তিনি। এর মধ্য দিয়ে তাকে অর্জন করতে হয়েছে স্বীকৃতি। তার জন্ম হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে। ১৯০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। যে বছর আইনস্টাইনের চারটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল। বছরটি মিরাকল ইয়ার হিসেবে পরিচিত। তিনি ইটভস লরেন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। এখানেই তিনি পিএইচডি করেন। যুদ্ধ আর আত্মবিরোধে জর্জরিত একটি দেশে বড় হয়েছেন। রসায়ন পড়ার অভিপ্রায় নিয়ে ১৯২২ সালে ইটভস লরেন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শিগগিরই বুঝতে পারলেন তার আসল উৎসাহ হলো গণিত। তিনি অধ্যয়ন করেছিলেন জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ লিওপোল্ড ফেজারের সঙ্গে। ফেজারের বক্তৃতা তাকে গণিতের জগতে নিয়ে আসে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন ফেলো ল্যাসজেলো ক্রামারের প্রভাবও রোজসা পিটারের ওপর ছিল। তারই পরামর্শে গডেলের গবেষণাগুলো ঘাটাঘাটি করেন। ১৯৩০ সালে তার প্রথম গবেষণাপত্র ছিল সংখ্যাতত্ত্বের ওপর। কিন্তু এটি ডিকসন কর্তৃক আগেই প্রমাণিত হওয়ায় তিনি নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। এবং তিনি কবিতা লিখে সময় কাটাতে থাকেন। কিছুদিন পরই ক্রামারের উৎসাহে আবার গণিতের প্রতি উৎসাহবোধ করলেন। ইহুদি বংশোদ্ভূত হওয়ায় ১৯৩৯ সালে হাঙ্গেরিতে ইহুদি নিধন আইনের কোপানলে তাকে পড়তে হয়। তার প্রথম পোস্টিং ছিল বুদাপেস্ট টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১৯৪৫ সালে। টিচার্স কলেজে পিটারের বছরগুলো কেটেছিল গ্রন্থ রচনায়। 'চষধুরহম রিঃয ওহভরহরঃু' শিরোনামে তার প্রথম গ্রন্থ ১৯৫৫ সালে জার্মান ভাষায় প্রকাশিত হয়। ১৯৫৫ সালে কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে ইটভস লরেন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পদে যুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার প্রধান কাজ গণিতের রিকার্সিভ ফাংশন তত্ত্ব প্রকাশিত হয়।

পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আন্ট রোজসা পিটার নামে। কাজ করে গেছেন গণিতে নারীদের সুযোগ বৃদ্ধিতে। তার নাম লেখা থাকা উচিত কমপিটিশনাল তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা গডেল, টুরিং, চার্চ, ক্লিনদের সঙ্গে। কিন্তু তারা সবাই বিস্মৃত। পেূর্ব ইউরোপের অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো অবহেলার শিকারে পরিণত হয়েছেন। 

খালেদা ইয়াসমিন ইতি

0 comments:

Post a Comment