Monday, June 21, 2021

পরীমনির জন্ম ১৯৯২ সালের ২৪ অক্টোবর, নড়াইলে। জন্মনাম শামসুন্নাহার স্মৃতি। ছোট্ট পরীকে নিয়ে বাবা মনিরুল ইসলাম ও মা সালমা সুলতানার ছিল সুখের সংসার। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন সয়নি পরীর কপালে। নায়িকার বয়স যখন মাত্র তিন বছর, তখন তার মায়ের মৃত্যু হয়। আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু মারা যান তিনি। সে সময় মা হারা পরীকে রেখে আসা হয় নানাবাড়ি পিরোজপুরে। সেখানে নানা শামসুল হক গাজীর তত্ত্বাবধানে ছোটবেলা কাটে অভিনেত্রীর।

নানাবাড়িতে থেকেই পরীমনি মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ২০১১ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগে বিএ (সম্মান) পড়াকালীন তিনি চলে আসেন ঢাকায়। নাচ শিখতে শুরু করেন বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে (বাফা)। শোনা যায়, সে সময় পরীমনি তার বাবাকে নিয়ে সাভারের ব্যাংক টাউনে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। স্ত্রী বিয়োগের পর শুধু পরীর কথা ভেবেই আর বিয়ে করেননি বাবা মনিরুল ইসলাম।


 

কিন্তু ২০১২ সালে বাবার ভালোবাসাও হারাতে হয় পরীমনিকে। ওই বছরের ২১ জানুয়ারি সিলেটে তার বাবার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তিনি রিকন্ডিশন গাড়ির ব্যবসা চালাতেন। গুঞ্জন রয়েছে, এই ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণেই প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছিলেন পরীমনির বাবা মনিরুল ইসলাম। যদিও নায়িকার বাবার সেই হত্যা-রহস্য আজও উদঘাটিত হয়নি।

বাবার মৃত্যুর পর সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়েন পরীমনি। শোনা যায়, এরপর নায়িকা সাভারে তার এক খালার বাসায় থাকতে শুরু করেন এবং মিডিয়ায় কাজ করার চেষ্টা চালান। সেই চেষ্টার প্রথম সাফল্য হিসেবে ২০১৪ সালে তিনি একটি নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান, যেটি সে সময় এসএ টিভিতে প্রচার হয়। এরপর ২০১৫ সালে ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ নামে সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রেও অভিষেক করেন।

পরীমনি এখন ইন্ডাস্ট্রির মস্তবড় নায়িকা। এক নামে তাকে সারা দেশের মানুষ চেনেন। ক্যারিয়ারের শুরুতেই একসঙ্গে ২০টিরও বেশি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে ঢালিউডে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন পরীমনি। কিন্তু তার চুক্তিবদ্ধ হওয়া অধিকাংশ ছবিই নির্মিত হয়নি। কয়েকটি আবার নির্মাণের পর মুক্তির আলো দেখেনি। এ পর্যন্ত পরীমনি অভিনীত দুই ডজনের মতো ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ‘স্বপ্নজাল’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’ ছাড়া আর একটিও দর্শকপ্রিয়তা পায়নি।

সেই পরীমনি মা-বাবা হারিয়ে, নড়াইল থেকে পিরোজপুর-সাভার হয়ে এখন আস্তানা গেড়েছেন ঢাকার অন্যতম অভিজাত এলাকা বনানীতে। সেখানে বিলাসবহুল এক ফ্ল্যাটে একাই থাকেন নায়িকা। এই ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝে তার একাকীত্বের সঙ্গী হন নানা শামসুল হক গাজী, যিনি এখনো বেঁচে আছেন। তিনি মূলত পিরোজপুরে নিজের বাড়িতে সন্তানদের সঙ্গে থাকেন। মাঝেমধ্যে পরীর আবদারে ছুটে আসেন ঢাকায়।


 অর্থাৎ, পরীমনির জীবনে আপন বলতে এখন নানা-নানি, মামা-মামি। ঢালিউডের বাতাসে তার একাধিক বিয়ের গুঞ্জন ভেসে বেড়ালেও স্বামী-সংসারেই স্থায়ী হননি নায়িকা। শোনা যায়, চলচ্চিত্রে আসার আগে পরীমনির একবার বিয়ে হয়েছিল। তবে সে বিয়ের কথা স্বীকার করেননি নায়িকা। এরপর ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিনোদন সাংবাদিক তামিম হাসানের সঙ্গে তিনি বাগদান সারেন। ওই বছর তাদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল।


কিন্তু সেই বাগদান আর বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। কিছুদিন পরই আলাদা হয়ে যান তামিম-পরীমনি। তবে ঢালিউডে কান পাতলে এখনো শোনা যায়, তারা নাকি গোপনে বিয়ে সেরে ফেলেছিলেন। কিন্তু টেকেনি সে সংসার। এরপর ২০২০ সালের ১০ মার্চ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে বিয়ে করেন পরীমনি। কিছুদিন না যেতে গত বছর লকডাউনের মধ্যে ভেঙ্গে যায় সেই বিয়েও।

 

সূত্র: ঢাকাটাইমস

 


 

 

 

 

0 comments:

Post a Comment

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.