অমিতাভ বচ্চন জন্মগ্রহন করেন ১১ই অক্টোবর, ১৯৪২ ভারতের এলাহাবাদে। অমিতাভ বচ্চনের পুরো নাম অমিতাভ হরিবংশ বচ্চন।
প্রতাপশালী তারকার ৰমতাবলে নয়, দর্শকদের ভালোবাসায় তিনি এ জগতের 'শাহেন শাহ'। একটি দুটি বছর ধরে নয়, চার দশক ধরেই ইন্ড্রাস্ট্রির 'ফ্যাক্টর' তিনি। অভিনয় দৰতা, প্রভাব আর সমসাময়িক বিষয় বিবেচনায় তার তুলনা বলিউডে কেবল তিনি নিজেই। ৬৮ বছর বয়সী অমিতাভ ১৩ বছর বয়সী জটিল প্রোজেরিয়া রোগে আক্রানত্দ ছেলের চরিত্র যেমন অনায়েসে ফুটিয়ে তুলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে পারেন , তেমনি স্রেফ 'ডনকো পাকরানা মুশকিলই নেহি নামুমকিন হ্যায়,' এর মতো সংলাপ দিয়ে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সবশ্রেণীর দর্শককে মাতিয়ে রাখতে পারেন দশকের পর দশক। অভিনয়ের চার দশক পেরিয়েও বক্স অফিস নিয়ে তাকে ভাবতে হয়না। জনপ্রিয়তা কিংবা নির্মাতা চাহিদার প্রশ্নে এমনই তার অপ্রতিদ্বন্দ্বি অবস্থান। এই অবস্থান তৈরির গল্পটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিলনা।
১৯৬৯-এ অমিতাভ বচ্চন ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন 'সাত হিন্দুসত্দানি' ছবির মাধ্যমে। ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি। এরপর তিনি অভিনয় করেন আনন্দ (১৯৭১) ছবিতে। বাণিজ্যিক সাফল্যর পাশাপাশি চলচ্চিত্র সমালোচকদের প্রশংসাও আদায় করে ছবিটি। ছবিতে ডাক্তারের ভূমিকায় অভিনয় করে অমিতাভ বচ্চন ফিল্মফেয়ার-এ শ্রেষ্ঠসহ অভিনেতার পুরস্কার পান। এই ছবির পর তার অভিনীত বেশ কতগুলি ছবি বক্স অফিসে বাণিজ্যিক সাফল্যের মুখ দেখেনি। ১৯৭৩-এ প্রকাশ মেহেরা তার জঞ্জীর (১৯৭৩ ছবিতে অমিতাভ 'রাগী যুবক' হিসেবে এক নতুনরূপে নিজেকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পান। এ ছবি তাঁকে বক্স অফিসে সাফল্য এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন এনে দেয়। যশ চোপরা পরিচালিত দিওয়ার-এ ছবির জন্যে তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পান। ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত শোলের অভাবনীয় সাফল্যের পর বচ্চন মুম্বাই ফিল্ম জগতে তার জায়গা পাকা করে নেন ১৯৭৭-এ অমর আকবর অ্যান্থনী ছবিতে তার অভিনয়ের জন্যে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান। তার সাফল্য দেখে ফরাসি পরিচালক ফ্রাসোয়া ত্রুফো তাকে 'ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রি' খেতাব দিন। ১৯৮৪ সালে তাদের পারিবারিক বন্ধু রাজীব গান্ধীর সমর্থনে অমিতাভ অভিনয় থেকে সংৰিপ্ত বিরতি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। তারপর ১৯৮৮ সালে শাহেনশাহ ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে অমিতাভ বচ্চন চলচ্চিত্র জগতে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৯০-এ 'অগি্নপথ' ছবিতে এক মাফিয়া ডনের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি এই সম্মান পান। এই কয়েকটি বছরের পর তিনি বেশকিছু দিনের জন্য পর্দা থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। স্বল্পকালীন অবসর জীবনে অমিতাভ বচ্চন প্রযোজনার কাজে হাত দেন। তিনি অমিতাভ বচ্চন করপোরেশন লিমিটেড স্থাপন করেন ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৭ সালে আর্থিক অনিয়ম এবং কার্যৰেত্রে বিশৃঙ্খলার কারণে প্রতিষ্ঠানটি ভেঙ্গে পড়ে। ২০০০ সালে অমিতাভ বচ্চন 'কৌন বনেগা ক্রোড়পতি'র মাধ্যমে সাফল্যের ধারায় ফেরেন। ২০০০-এ অমিতাভ বচ্চন যশ চোপড়ার বক্স অফিসে সফল ছবি মোহাব্বতে-তে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে নিজের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরম্ন করেন। এরপর কভি খুশি কভি গম (২০০১), বাগবান (২০০৩), আঁখে (২০০২), খাকি (২০০৪), দেব (২০০৪), 'বস্ন্যাক'(২০০৫), সরকার (২০০৫) ইত্যাদি ছবিতে তার অভিনয় সমালোচকদের উচ্চ-প্রশংসা লাভ করে।
সাংসারিক জীবনে অমিতাভ বচ্চন বিয়ে করেছেন জয়া ভাদুরীকে। যিনি জয়া বচ্চন নামে পরিচিত।
0 comments:
Post a Comment