Breaking News
Loading...
Monday, October 17, 2011

অ্যানা হেরিংগার একজন স্থপতি। তিনি বাংলাদেশে সোস্যাল সার্ভিস ভলান্টিয়ার কাজের জন্য এসে মাটি দিয়ে এক অত্যাধুনিক দোতলা বাড়ী তৈরী করেন। বাড়িটি ’দীপশিখা’ এনজিও-এর অফিস কার্যের জন্যে তৈরি করা হয়। পরিবেশ-বান্ধব এই বাড়িটিতে দীপশিখার ছাত্রদের বৈদ্যুতিক দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। বাড়িটি 'ট্রাইনিয়াল আগাখান' পদকে ভূষিত হয়।
১৯৭৭ সালের ১৩ অক্টোবর জার্মানীর রোসেনহেইম শহরে অ্যানা হেরিংগারের জন্ম। পরবর্তীতে লোফেন শহরে তিনি বেড়ে উঠেছেন। বর্তমানে অস্ট্রিয়ার সালসবুর্গ শহরে তিনি বসবাস করছেন। ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকেই সোস্যাল সার্ভিস কাজে ভলান্টিয়ার হিসেবে তার বাংলাদেশে আগমন।
১৯৯৯-২০০৪ সাল পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচারাল স্টাডিজ-এর উপর তিনি পড়াশুনা করেছেন। ২০০৪ সালে তিনি প্রোফেসর রোনাল্ডের তত্ত্বাবধানে ““'School–handmade in Bangladesh””' নামক একটি ডিপ্লোমা প্রোজেক্ট পরিচালনা করেন।
২০০৫ সাল থেকে তিনি BASE habitat -এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ই তিনি METI-school project-এর জন্য ফাণ্ড রেইজ, প্ল্যানিং ইত্যাদি কাজে জড়িয়ে পড়েন। এই প্রোজেক্টটি মূলত: Eike Roswag এবং Shanti Partnerschaft–Bangladesh এর সহযোগীতায় ’'দীপশিখা’' নামক একটি এনজিও পরিচালনা করেছে। ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত তিনি Shanti Partnerschaft–Bangladesh -এর ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি লিন্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত আছেন।
এখন আসুন জেনে নেই অ্যানা'র মাটির তৈরি দোতলা বাড়ির ইতিহাস:
সম্পূর্ণ বাঁশ এবং কাদামাটি দিয়ে তৈরি মাটির এই দোতলা বাড়ির সংখ্যা দুইটি। ২০০৬ সালে প্রথম যে বাড়িটি তৈরি হয়, সেই প্রোজেক্টটির নাম ছিল ’'রুদ্রপুরের METI – Handmade School'। দোতলা এই স্কুলটির নিচ তলায় তিনটি কক্ষ এবং উপরের তলায় দুইটি কক্ষ রয়েছে। অস্ট্রিয়া এবং জার্মানীর বিজ্ঞ ব্যাক্তি ছাড়াও বাংলাদেশের অনেক সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি এই প্রোজেক্টের সাথে তখন জড়িত ছিলেন।

এই বাড়ি দু'টি বানানো হয়েছে মূলত: দীপশিখা এনজিও-এর দু'’টি শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম - Education and Training Institute (METI) Ges Dipshikha Electrical Skill Improvement [DESI] project -–এর জন্যে। এই দু’টি প্রোগ্রামের মাধ্যমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সৃজনশীলতার চর্চা করাই ছিল প্রোগ্রাম দু'টির উদ্দেশ্য।

METI (Modern Education and Training Institute) Project:
স্থপতি: Anna Heringer, Eike Roswag
মূল পরিকল্পনাকারী: Anna Heringer
টেকনিক্যাল পরিকল্পনাকারী: Eike Roswag
                               রুদ্রপুরের METI – Handmade School
                                       মেটি প্রোজেক্টের স্কুল
                                 মেটি প্রোজেক্টের স্কুল-এর নিচতলা
                                      একনজরে মেটি প্রোজেক্ট
যাদের জন্যে এই প্রোজেক্টটি করা হয়েছে: Dipshikha/METI
(Modern Education and Training Institute), Bangladesh
in cooperation with Partnerschaft Shanti – Bangladesch
and the Kindermissionswerk Aachen
                             মেটি স্কুলের দোতলায় যাবার সিঁড়ি
DESI Project (Dipshikha Electrical Skill Improvement [DESI] project):
মেটি প্রোজেক্টের দুইতলা বাড়ির মতোই বাঁশ এবং কাদামাটি দিয়ে দ্বিতীয় যে অবিশ্বাস্য স্থাপত্যকলার নিদর্শন স্বরূপ দ্বিতীয় বাড়িটি তৈরি হয়, তা প্রথম বাড়িটির একদম কাছেই, একই কম্পাউণ্ডের ভেতরে। ১৭ অক্টোবর, ২০০৮ এটি উদ্বোধন করা হয়। এই দোতলা বাড়িটি শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যকলার জন্য ২০০৭ সালে 'ট্রাইনিয়াল আগাখান' পদকে ভূষিত হয়। এই বাড়িটি ’দীপশিখা’ এনজিও-এর অফিস কার্যের জন্যে তৈরি করা হয়। পরিবেশ-বান্ধব এই বাড়িটিতে দীপশিখার ছাত্রদের বৈদ্যুতিক দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ দেশী উপাদানে তৈরি পুরো বাড়িটি সোলার পাওয়ার সিস্টেমে চলে। বাড়ির ভেতরে দু’টি পাওয়ার জেনারেটরও স্থাপন করা হয়েছে।
                                        দীপশিখা অফিস
                                  দীপশিখা অফিসের দ্বিতীয় তলা
                             দীপশিখা অফিসের দ্বিতীয় তলা থেকে তোলা ছবি
                                                ক্লাস রুম
                        ক্লাসরুমের ভেতরে পাওয়ার সাপ্লাই কাজে ব্যবহৃত ব্যাটারী
দুইতলা বিশিষ্ট এই বাড়িটির মূল নক্সা করেছেন স্থপতি Anna Heringer। এ বাড়িটির নিচ তলায় প্র্যাকটিকাল ট্রেনিং-এর জন্যে একটি ক্লাসরুম, ২ টি অফিস রুম, স্যানিটারী ইউনিট, টেশনিক্যাল রুম এবং স্টোর রুম রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় ১ টি ক্লাসরুম, বারান্দা, শিক্ষকদের থাকার দু’টি রুম এবং ২ টি টয়লেট রয়েছে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাড়িটি তৈরির কাজ শুরু হয় এবং ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে শেষ হয়।
                                            দোতলার ক্লাসরুম
                                    দীপশিখা অফিসের দ্বিতীয়তলায়
চীফ ইন্সট্রাকটর রোমন বিশ্বাসের রুমের সামনে, তার রুমের ভেতরের দেয়ালে দেখলাম শীতলপাটি দিয়ে মোড়ানো রয়েছে।
              ইলেকট্রিক্যাল ছাত্রদের জন্যে নিচতলায় রয়েছে একটি প্র্যাকটিকাল রুম
                                     অ্যানা হেরিংগারের মাটির বাড়ি

স্থপতি অ্যানা হেরিংগারের পরিকল্পনায় তৈরি মাটির বাড়ি যা এখন দীপশিখা এনজিও-এর অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সূত্রঃ সাম হোয়ার ইন ব্লগ, পয়গম্বর

0 comments:

Post a Comment