উমা বসু, হাসি (জন্ম: ২২ জানুয়ারি ১৯২১ - মৃত্যূ: ২২ জানুয়ারি ১৯৪২) - একই তারিখে জন্ম আর মৃত্যু, মধ্যে মাত্র ২১ টি বছরের সময়কাল কি একটি প্রতিভার বিচ্ছুরণের ও বিকাশের জন্য যথেষ্ট ?
কলকাতার এক নামী গানের পরিবারে তাঁর জন্ম, পরিবারের লতাপাতায় পান্নালাল ঘোষ আর প্রতিভা বসুর মতো শিল্পীরা জড়িয়ে ছিলেন। হাসির গলা ছিল অসাধারণ মিষ্টি, প্রতিভা ছিল সর্বব্যাপী। দিলিপকুমার রায় ও ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো দিকপালদের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা করেছিলেন তিনি। তাঁর গায়কীতে দিলিপকুমার রায়ের প্রভাব ছিল বেশী। সুরের স্বাভাবিক মাধুর্য, তান, লয়, দরদ, এই সবই তাঁর কণ্ঠে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত ছিল।
মাত্র ১১ বছর বয়সে প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড বের হয় তাঁর। কলকাতা বেতারে, গানের অনুষ্ঠানে এই ছোট মেয়েটির জয়যাত্রা চলতে থাকে। আর বাড়ীতে, নিয়মিত গানের আসরগুলো হয়ে দাঁড়ায় তারই উপলক্ষে। সেই আসরগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই আসতেন পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ। তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহানা দেবী, অতুলপ্রসাদ সেন, উস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ, কবি জসীমউদ্দিন। ১৯৩৮ এ তাঁর গানে মুগ্ধ হয়ে মহাত্মা গান্ধী তাঁকে নাইটিংগেল উপাধি দেন ও বুলবুল নামে ডাকতে থাকেন।
কিন্তু তাঁর আর শ্রোতাদের কপালে এই সুখসময়ের বাতি অচিরেই এক ফুঁৎকারে নিভে যায়, মাত্র ২১ বছর বয়সেই জীবনের রুপ রস গন্ধ স্বাদ না পেয়েই অজানায় হারিয়ে যান ক্ষণজন্মা এই গানের বুলবুল।
0 comments:
Post a Comment