Breaking News
Loading...
Thursday, August 5, 2010

ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী তিনি। তার প্রচেষ্টাতেই ভারত সরকার পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটাতে সফল হয়েছে। তিনি হলেন, ভারতের একাদশতম রাষ্ট্রপতি ড. আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আবদুল কালাম। চেন্নাই শহরের আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবদুল কালাম ভারতীয়দের ইতিহাসে রাজনীতি ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে আছেন।

ড. এপিজে আবদুল কালামের জন্ম ১৯৩১ সালে, ভারতে। গরিব ঘরে তার জন্ম। তার জীবন-সংগ্রাম শুরু হয় হকার হিসেবে। ১০ বছরের স্কুলছাত্র থাকাকালে দক্ষিণ ভারতের উপকূলবর্তী শহর রামেশ্বরে প্রতিদিন সকালে কাছাকাছি এলাকায় সংবাদপত্র বিক্রি করে বালক কালামকে তার পরিবারের জন্য বাড়তি আয় করতে হতো।

আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও পড়ালেখা করেন। তিনি ছিলেন খুব ভালো ছাত্র। বিজ্ঞানে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি নিয়ে মাদ্রাজে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন এবং ১৯৫৮ সালে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে (উজউঙ) যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিযুক্ত হন।

১৯৬৩ সালে আবদুল কালাম ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনে যোগ দেন। কিন্তু ১৯৮২ সালে আবার ডিআরডিও-তে ফিরে আসেন। ড. এপিজে আবদুল কালাম ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জনক। তিনি পাঁচটি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের জন্য এটমিক এনার্জি কমিশনের ((অঊঈ) চেয়ারম্যান আর চিদাম্বরমের সঙ্গে মিলিত হন।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞান-সাংবাদিক কে এস জয়রামন বলেন, 'তিনি খুবই সহজ-সরল মানুষ। তার মধ্যে কোনো দম্ভ নেই। তাকে ভুল বোঝার সম্ভাবনা যথেষ্ট। তিনি অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেন। আমি তাকে গভীর চিন্তার মানুষ বলে মনে করি। তার চরিত্রের গোপনীয়তা রক্ষার বৈশিষ্ট্য তার চাকরির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।'

আবদুল কালাম সুউচ্চ পদে আসীন ব্যক্তি। উপগ্রহ তৈরি এবং কয়েক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ভাবন করার কৃতিত্ব তার রয়েছে। এর মধ্যে দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তিনি তৈরি করেছেন যা পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম। আবদুল কালাম অত্যন্ত মিতব্যয়ী জীবনযাপন করেন। তিনি বাস করেন দুই কক্ষবিশিষ্ট বাড়িতে।

চিন্তাধারায় তিনি একজন আধুনিক মানুষ। টাইমস অব ইন্ডিয়া সংবাদপত্রের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দশ লাখ মানুষের দেশের মতো নয়, আমাদের একশ' কোটি মানুষের দেশের মতো চিন্তা করতে হবে এবং কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, 'স্বপ্নকে চিন্তার রূপ দিন এবং চিন্তাকে কাজে রূপদান করুন। কাজগুলো আপনি নিজেই করুন, যন্ত্রপাতি আমদানি করে সংক্ষিপ্ত পন্থায় লক্ষ্য হাসিলের কাজে মেতে উঠবেন না। বাইরের সাহায্য ছাড়া ভারতের উপগ্রহ, ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি ভারতের সুপার কম্পিউটার ও ক্রাইওজেনিক স্পেস টেকনোলজি অর্জনের কথাও ঘোষণা করেন। এ দুটি প্রযুক্তি যথাক্রমে আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছ থেকে চেয়েও নিতে পারেনি ভারত। অবশেষে নিজেরাই সেটি অর্জন করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। এপিজে আবদুল কালাম ২০০২ সালের ২৫ জুলাই ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন।

সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পর বছরতিনেক আগে তার মেয়াদ শেষ হয়। ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব মেধাবী আবদুল কালাম সাম্প্রদায়িকবিরোধী একজন মানুষ। তিনি কোরআন তেলাওয়াত এবং হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র সমানভাবে আবৃত্তি করতে পারেন। চিরকুমার এই মেধাবী মানুষটি আপাদমস্তক নিরামিষভোজি। ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত তার খুব প্রিয়। তিনি তার মাতৃভাষা তামিল সাহিত্য প্রচুর পছন্দ করেন। তিনি একজন কবিও বটে। ১৯৯৯ সালে তার আত্দজীবী মূলক গ্রন্থ 'উইংস অব ফায়ার' প্রকাশিত হয়। এটি সারা বিশ্বে দারুণ সমাদৃত হয়।

0 comments:

Post a Comment

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.