Breaking News
Loading...
Monday, July 16, 2012

সুহা আরাফাতের প্রকৃত নাম সুহা দাউদ তাউইল। ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে বিয়ে আগে তিনি এ নামেই পরিচিত ছিলেন। পশ্চিম তীরে ১৯৬৩ সালের ১৭ জুলাই একটি ক্যাথলিক খ্রিস্টান পরিবারে তার জন্ম। বাবা দাউদ তাউইল পেশায় ছিলেন ব্যাংকার। আর মা রেমন্ডা হাওয়া তাউইল একাধারে কবি ও লেখক। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের মুক্তি-আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। এ জন্য তিনি বেশ কয়েকবার জেলেও গিয়েছেন। পরে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকেই বেছে নেন রেমন্ডা।
সুহা বেড়ে উঠেছেন পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লাহতে। কিছু দিন পরিবারের সঙ্গে নাবলুসেও থেকেছেন। পড়াশোনা করেছেন জেরুজালেমে। ১৮ বছর বয়সে তিনি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তার বোনের কাছে চলে যান। সেখানে থেকেই লেখাপড়া শেষ করেছেন। ছাত্রাবস্থায় সুহা ফিলিস্তিনি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ফ্রান্সে থাকা ফিলিস্তিনিদের সংগঠন জেনারেল ইউনিয়ন অব প্যালেস্টাইন স্টুডেন্টসের (জিইউপিএস) নেতা ছিলেন।
১৯৮৫ সালে আরাফাতের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় সুহার। অনেকের মতে, ১৯৮৭-৮৮ সালের মধ্যে তাদের দেখা হয়েছিল। মায়ের সূত্র ধরেই ফিলিস্তিনি নেতার সঙ্গে পরিচয় সুহার। ১৯৮৯ সালে আরাফাতের দোভাষী হিসেবে তিনি কাজ করেন। এরপর আরাফাত পিএলওর হয়ে কাজ করতে সুহাকে তিউনিসিয়ায় ডেকে পাঠান। আরাফাতের কথায় তিনি প্যারিস থেকে তিউনিসিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে যাওয়ার কিছু দিন পর সুহা ইসলাম গ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালের ১৭ জুলাই ২৭ বছরের সুহাকে গোপনে বিয়ে করেন ৬১ বছরের আরাফাত। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। ১৯৯৫ সালের ২৪ জুলাই তাদের একমাত্র সন্তান জাহওয়া আরাফাতের জন্ম হয়। সুহা মেয়েকে নিয়ে প্যারিসেই থাকতেন। দুইজন দুই জায়গায় থাকায় তাদের সম্পর্কচ্ছেদ হয়েছে—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আরাফাত অসুস্থ হওয়ার পর তিনি ফিলিস্তিনে ফিরে আসেন। স্বামীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার সঙ্গেই ছিলেন।

ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর তিন বছরের মেয়ে জাহওয়াকে নিয়ে তিউনিসিয়াতে থাকতেন সুহা। ২০০৬ সালে তিউনিসিয়া সরকার তাদের দুজনকে দেশটির নাগরিতকত্ব দেয়। তবে হঠাত্ করেই তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ সুহার নাগরিকত্ব বাতিলের হুমকি দেয়। সুহা অভিযোগ করেছিলেন, তিউনিসিয়ায় থাকা তার সম্পদও জব্দ করা হয়েছে। এরপর সুহা সন্তানকে নিয়ে কিছু দিন মাল্টায় থেকেছেন। সেখান থেকে চলে যান ফ্রান্সে। বর্তমানে তিনি সেখানেই থাকেন।

২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তিউনিসিয়ার কোর্ট অব ফাস্ট ইন্সট্যান্স সুহার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তিউনিসিয়ার সাবেক ফাস্ট লেডির সঙ্গে থাকা যৌথ ব্যবসায়ে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে তিনি সুহা অভিযোগ অস্বীকার বলেন, তার এবং ফিলিস্তিনের দুর্নাম করার জন্য তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ এ কাজ করেছে।

সমপ্রতি ফ্রান্স কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেছে, তারা সুহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশি অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি ডলার স্থানান্তরের বিষয় তদন্ত করছে। এর ফলে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।
পিএলওর অর্থ আত্মসাত্ বা পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে সুহা বলেন, এসব গুজব রটানোর পেছনে ইসরায়েলের হাত আছে। সমপ্রতি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়াল শ্যারন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার স্বামীর অনেক ঘনিষ্ট সহযোগীই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পিএলওতে তাকে কেউ খুব একটা ভালো চোখে দেখত না। এ কারণেই সুহার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

0 comments:

Post a Comment

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.