Breaking News
Loading...
Sunday, January 3, 2010

নলিনী দাসের জন্ম ১৯১০ সালের ১ জানুয়ারী। বরিশাল জেলার উত্তর শাহাবাজপুর (বর্তমান ভোলায়) তাঁর বাবা দূর্গামোহন দাস ছিলেন ভোলার স্থানীয় জমিদারী এস্টেটের নায়েব । নলিনী দাসের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। শৈশবে তাঁর শিক্ষা জীবন ভোলাতেই শুরু হয়। মাত্র ১২ বছর বয়সে

তিনি কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে জ়ড়িয়ে পড়েন। দুরন্ত চঞ্চল মেধাবী এই বালক ১৯২১ সালের কংগ্রেস ও খেলাফত কমিটির আহবানে হরতাল ধর্মঘটের সময় ৫ শ্রেণীর ছাত্র অবস্থায় গ্রেফতার হন। এক দিনের সাজা দিয়ে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। এ কারণে কিশোর নলিনী দাস ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতমাতাকে মুক্তি করার জন্য অগ্নি শপথ নেন। ১৯২৪ সালে তিনি যুক্ত হন বিপ্লববাদী যুগান্তর দলে। পড়াশুনা আর দেশের স্বাধীনতার জন্য দৃঢ়চিত্তে শুরু অক্লান্ত পরিশ্রম। ১৯২৮ সালে সশস্ত্র বিপ্লববাদী দলের সাথে যুক্ত অবস্থায় প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর বরিশালের বিএম কলেজে আইএসসি’তে ভর্তি হন। আইএসসি পরীক্ষার পূর্বে কলকাতা মেছুয়া বাজারে বোমার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরয়ানা জারী হয়। শুরু হই পলাতক জীবন। ১৯৩০ সালের নবেম্বর মাসে কলকাতায় পুলিশ কমিশনার টেগার্ট হত্যা প্রচেষ্ঠা মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় তিনি মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়া সত্বেয় ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ডেটিনিউ করে প্রেসিডান্সি জেলে প্রেরণ করে। তারপর ১৯৩১ সালে তাঁকে হিজলী ক্যাম্পে পাঠানো হয়।
১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হিজলী ক্যাম্পে ব্রিটিশ পুলিশ রাজবন্দীদের উপর গুলি বষণ করে। এ সময় কলকাতার সন্তোষ মিত্র ও বরিশালের তারেকেশ্বর সেনগুপ্ত নিহত হন। আহত অবস্থায় নলিনী দাস ও ফনী দাসগুপ্ত হিজলী জেল থেকে পলায়ন করেন। আবার শুরু হয় পলাতক জীবন। ফরাসী অধিকৃত চন্দননগরের একটি বাড়ীতে আশ্রয় নিলেন নলিনী দাস, বীরেন রায় ও দিনেশ মজুমদার। (দিনেশ মজুমদার, টেগার্ট হত্যা প্রচেষ্ঠা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও মেদেনীপুর কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক এবং বীরেন রায়, ওয়াটসন হত্যা প্রচেষ্ঠা মামলার আসামী)।
মাত্র ৩ জনই চন্দননগর রাস্তায় পুলিশের সাথে ৪ ঘন্টাব্যাপী খণ্ডযুদ্ধ চালিয়ে যান। এতে পুলিশ কমিশনার কিউ নিহত হয়। শেষ পর্যন্ত বীরেন রায় গ্রেপ্তার হন। চন্দননগরের ঘটনার পর কর্নওয়ালিশ স্ট্রীটে বিপ্লবী কর্মী নারায়ণ ব্যানার্জীর তত্ত্বাবধানে নলিনী দাস, দিনেশ মজুমদার ও জগদানন্দ মূখার্জী আশ্রয় গ্রহণ নিলেন। তৎকালীন সময়ে তাঁর সহযোদ্ধারা তাঁকে দুর্ধর্ষ বিপ্লবী খেতাব দেন। তাঁর বিপ্লবী জীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন।
১৯৩৩ সালের ২২ মে পুলিশ ওই বাড়ী ঘেরাও করে। শুরু হয় বিপ্লবীদের সাথে খণ্ডযুদ্ধ। এক পর্যায় আহত অবস্থায় ধরা পড়েন তিন বিপ্লবী। বিচারে দিনেশ মজুমদারের ফাঁসি হয়। এ সময় নলিনী দাস ও জগদানন্দ মুখার্জীর বিরুদ্ধে ফাঁসি দেয়ার মত কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় তাঁদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ১৯৩৪ সালের মে মাসে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়।
আন্দামান সেলুলার জেল। ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠীর তৈরী করা নিকৃষ্টতম জেল। যেখানে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদেরকে অসভ্য বর্বর মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করা হত। যার পরিণতি মৃত্যু। সেখানেও নলিনী দাস অন্যান্য বিপ্লবীকে নিয়ে এক প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৩৪ সালের শেষের তিনি তাঁর বিপ্লবী জীবনের হিসেব-নিকেশ শুরু করলেন। ভাবনা-চিন্তা করতে থাকলেন সকল স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের নিয়ে। বিপ্লববাদী পথ নিয়েও ভাবলেন। এ সময় তিনি রাজনৈতিক পড়াশুনাও বাড়ালেন।
‘১৯৩৫ সালের এপ্রিল মাসে আন্দামান সেলুলার জেলে দুই কমিউনিস্ট নেতা কমরেড আব্দুল হালিম ও সরোজ মুখার্জী রাজবন্দী হয়ে এলেন। এই দুই বিপ্লবী আন্দামানে বন্দীদের রাজনৈতিক পড়াশুনা ও সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ সম্পর্কে ধারণা দিলেন। বন্দীদের মধ্যে প্রতিদিন গোপনে গোপনে বৈঠক হতো। এভাবে তাঁরা গঠন করলেন কমিউনিস্ট গ্রুপ। যে গ্রুপের মধ্যে নলিনী দাস ছিল সবচেয়ে বেশী আন্তরিক। অন্যদিকে বন্দীদের মধ্যেও নলিনী দাস ছিল সবার শ্রদ্ধার পাত্র। তাই সবকিছু বিবেচনা করে নলিনী দাসই বন্দীদের মাঝে পার্টি গড়ে গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন। ওই বছর সতীশ পাকড়াশী, নিরঞ্জন সেনগুপ্ত ও সুনির্মল সেন আন্দমান সেলুলার জেল থেকে দেশে চলে এলেন।
১৯৩৫ সালের ২৬ এপ্রিল সেলুলার জেলে কমিউনিস্ট কনসলিডেশন গঠন করা হয়। ১ মে, মে দিবসের কর্মসূচীতে ওই কনসলিডেশন ৩৫ জন যুক্ত হয়। ১৯৩৬ সালে সুধীন্দ্র রায়(খোকাদা), রবি নিয়োগীসহ আরো কয়েক জন দেশে ফিরে যান।
কমিউনিস্ট কনসলিডেশন আন্দামান সেলুলার জেলে রাজবন্দীদের নিয়ে বিপ্লবী নিকেতন গড়ে তোলে।
সেলুলার জেলকে বিপ্লবীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনণত করার জন্য শুরু হয় পড়াশুনা। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এবং বেলা ১টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পড়াশুনার নিয়মিত ক্লাস শুরু হল। সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হত। কমরেড কার্ল মার্ক্সের সাম্যবাদের ইশতেহার, লেনিনের পার্টিতত্ত্ব, স্টালিনের লেখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিপ্লবীরা জ্ঞান অর্জন করে। স্টালিনের লেখা ‘লেনিনবাদের ভিত্তি’র উপর ক্লাস নিতেন নিরঞ্জন সেনগুপ্ত। ১৩৯৬ সালে কমিউনিস্ট কনসলিডেশন মে দিবস পালন করে। নলিনী দাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এই আন্দামান সেলুলার জেলে কমিউনিস্ট পার্টির গ্রুপ গঠিত হয়। ওই সময় কমিউনিস্ট কনসলিডেশন দুটি হাতে লেখা পত্রিকাও প্রকাশ করে, ‘দুনিয়ার খবর’ও দি কল’। এর দায়িত্বে ছিলেন নলিনী দাস।
ওই বছর শেষের দিকে আন্দামানে রাজবন্দীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্রিটিশ সরকার তার সাম্রাজ্য ও আধিপত্য রক্ষার জন্য সশস্ত্র বিপ্লবীদের ধরে আন্দামানে পাঠায়। নতুন রাজবন্দীরাও এই কমিউনিস্ট কনসলিডেশনে যুক্ত হতে থাকেন। ১৯৩৭ সাল কাটে পড়াশুনা, সংঘবদ্ধ হওয়ার জন্য প্রস্তুতি, বন্দীদের নূন্যতম বেঁচে থাকার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম আর সেলুলার জেল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমরণ অনশনের পরিকল্পনার মাধ্যমে। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের সাথে, বাহিরের বিপ্লবীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা, যাতে তারা এই অনশনে সমার্থন দেয়। এক পর্যায় নলিনী দাসের প্রচেষ্টায় আন্দামানের প্রায় সকল বন্দী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়।
১৯৩৮ সালের ২৫ জুলাই আমরণ অনশন শুরু হয়। বার বার অনশন এবং এই অনশনের জন্য ৩ জন বিপ্লবীর মৃত্যুর ফলে কিছু দাবিদয়া পূরণ হয়। বন্দীরা পড়াশুনার সুযোগ পেলেন। ‘বিপ্লবী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করে তাঁরা পড়াশুনায় গভীর মনোযোগ দিলেন। এই সময় নলিনী দাস কমিউনিস্ট মতবাদে দীক্ষা গ্রহণ করলেন। গোপনে গঠীত হল কমিউনিস্ট কনসলিডেশন। আবার আমরণ অনশন শুরু করেন কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিপ্লবীরা। এক পর্যায়ে এই অনশনে সকল বন্দীরা যোগ দেন।
চুট্টগ্রামের সূর্য সেন, বরিশালের নলিনী দাস ছিলেন ব্রিটিশরাজের আতঙ্ক। এই দুজনকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেয়ার জন্য ব্রিটিশ ৫ হাজার টাকা পুরুষ্কার ঘোষণা করে।
অগ্নিযুগের বিপ্লবী আন্দোলনের সূচনা থেকেই অনুশীলন, যুগান্তর প্রভৃতি বিপ্লবী দলের সঙ্গে তিনি শৈশবে যুক্ত হয়ে পড়েন। অগ্নিযুগের ভগৎ সিং, সূর্য সেন, বাঘা যতীন, ক্ষুদিরাম, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, তারেকশ্বরে দস্তিদার, দীনেশ মজুমদার, বিনয়, বাদল, সুশীল লাহিড়ী, বসন্ত বিশ্বাস, রাম প্রসাদ, গোপীনাথ সাহা, আসফাক উল্লা, ভবানী ভট্টাচার্য, রামকৃষ্ণ রায়সহ আরো অনেকের মতো ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে নলিনী দাসকে মারার চেষ্ঠা করে ব্রিটিশ সরকার ব্যর্থ হয়। নলিনী দাসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন হত্যামামলার তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার কারণে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে আন্দামান দ্বীপান্তর সেলুলার জেলে পাঠিয়ে দেয়। আন্দামান দ্বীপান্তর ছিল ব্রিটিশের তৈরী করা দ্বিতীয় মৃত্যু ফাঁদ। এখানে যাদের পাঠানো হতো তারা কেউ কোনো দিন ফিরে আসতো না।
আন্দামান দ্বীপান্তর গিয়ে তিনি জেলখানার মধ্যে সকল বন্দিকে সংঘবদ্ধ করে জেল প্রশাসন ও ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আমারণ অনশন করেন। ৩৭ দিনের এ অনশনে ৩ জন বিপ্লবীর মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে ব্রটিশ বাধ্য হয়ে জেল কোর্ড আইন অনুসারে নূন্যতম বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশ নিশ্চিত করে। এই মৃত্যু ফাঁদের সকল সহযাত্রীকে নিয়ে তিনি একদিন দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইস্পাত দৃঢ় সংকল্প ও অফুরন্ত কর্মশক্তির অধিকারী, আমৃত্যু ত্যাগী এই বিপ্লবী যোদ্ধা তাঁর সারাটি জীবন মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। মানব সভ্যতাকে সাম্যবাদে উত্তোরণের ক্ষেত্রে বিপ্লবী সংগ্রামে তিনি ছিলেন আত্মনিবেদিত। মার্কসবাদের মতবাদকে গ্রহণ করে কমিউনিজমের মহান ব্রত নিয়ে নিবেদিত করেছেন জীবনের প্রতিটি মূহূর্ত । নলিনী দাস তার ৭২ বছরের ২৩ বছর আন্দামান, ব্রিটিশ-ভারতের জেলে ও পাকিস্তানের জেলে ছিলেন। এছাড়া আরো বিশ বছর ৯ মাস তার কাটে পলাতক জীবনের বিপ্লবী রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায়।
অন্যদিকে অনশনকারীদের সমর্থনে ভারতব্যাপী উত্তাল আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল যুগান্তর, অনুশীলন ও কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ। ফলে ১৯৩৮ সালের ১৯ জানুয়ারী ব্রিটিশ সরকার চাপের মুখে আন্দামান বন্দীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। কিন্তু নলিনী দাসসহ ৩০ জনকে দেশে এনে মুক্তি না দিয়ে আলীপুর, দমদম, প্রেসিডেন্সি ইত্যাদি কারাগারে পাঠানো হয়। এ সমস্ত জেলে নলিনী দাস রাজবন্দীদের নিয়ে পার্টির গ্রপ গঠন করেন। ব্রিটিশ সরকার এক পর্যায়ে তাকে কোনো বন্দীদের সাথে যোগাযোগ করতে দিত না। তখন তিনি আন্দামান সেলুলার জেলের এক অনবদ্য ইতিহাস ‘দ্বীপান্তরের বন্দী’ একটি বই রচনা করেন। যে বইটি ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয়। এটিই একমাত্র তথ্যবহুল আন্দামানের নির্মম ইতিহাস বহন করে।
অবশেষে ১৯৪৬ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর নলিনী দাস মুক্তি পান। দেশে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়ে কৃশক সমিতিকে গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। গোটা পাকিস্তান আমলটাই তার কেটেছে জেলে আর আত্মগোপনে। প্রথমে মুসলীম লীগের শাসন আমলে ১৯৫০-১৯৫৫ সাল পর্জন্ত পুনরায় তার কেটেছে জেল জীবন আর আইয়ুব শাহীর এক দশক ধরে আন্ডারগ্রাউন্ড জীবন।
১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর স্বাধীন বাংলাদেশে নবউদ্যমে আমৃত্যু নলিনী দাস বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রক্ত পতাকা হাতে নিয়ে অগ্রসেনানী হিসেবে শোষণ মুক্তির লড়াইকে অগ্রসর করতে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের এতিহাসে কমরেড নলিনী দাস এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর বিপ্লবী জীবন থেকে নতুন প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। কমিউনিস্ট কর্মীরা তো অবশ্যই।
শুধু অগ্নি্যুগের সশস্ত্র বিপ্লপবাদী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনই নয়, ১৯৪৭- এ দেশ ভাগের পরে ৭১’র ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম সারির সংগঠকদের মধ্যেও তিনি ছিলেন উল্লেখযোগ্য। ১৯৭২-৮২ সাল পর্যন্ত দেশ গড়ার কাজে গণমানুষের মধ্যে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন আমৃত্যু।
দেশমাতৃকা ও দেশের মানু্যষের সার্বিক মুক্তির আন্দোলনে নিবেদিত প্রাণ কমরেড নলিনী দাস লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি পিতা দূর্গামোহন দাসের নামকরণে একটি জনকল্যাণ ট্রাষ্টের নিকট হস্তান্তর করে যান।
এই কিংবদন্তী বিপ্লবীর লড়াই-সংগ্রাম ব্যতীত তাঁর জীবনে সময়ের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই তিনি মানুষের স্বাধীনতা, অধিকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যয় করেছেন।

0 comments:

Post a Comment