বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের এক সভ্রান্ত মুসলিম ও পীর পরিবারে সাজেদা চৌধুরীর জন্ম। তাঁর পিতা মরহুম সৈয়দা হামিদুল্লাহ এবং মাতার নাম মরহুম সৈয়দা আছিয়া খাতুন। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু নানার বাড়ি মাগুরা জেলার আলোকদিয়ায়। কোলকাতার বিখ্যাত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৫৬ সাল। যে সময় এদেশের নারীদের বাইরে বের হওয়াই ছিল কষ্টকর ব্যাপার, সে সময়ই সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আওয়ামীলীগে যোগদার করে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালে চট্টগ্রামে অল পাকিস্তান উইমেন এসোসিয়েশন (আপওয়া) এর সাধারন সম্পাদক থাকাকালীন তিনি নারী কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ এবং নারীদের সংগঠিত করেন।১৯৭১ সনের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিবনগর সরকারের নির্দেশে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে গঠিত কোলকাতার ‘গোবরা নার্সিং ক্যাম্প’ এর পরিচালক নিযুক্ত হন। তিনি স্বাধীনতার পর ১৯৯১, ২০০৯ সনে সরাসরি এবং ১৯৭৩, ১৯৯৬ সালের সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭-২০০১ পর্যন্ত বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব তিনি সফলতার সাথে পালন করেন। প্রবীণ এই খ্যাতিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ সামাজিক আন্দোলনেও ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়। ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত মহিলা পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও বাংলাদেশ গার্ল গাইড এর জাতীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এসব পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ১৯৭৪ সনে ‘সিলভার এ্যালিফেন্ট এ্যাওয়ার্ড, একই বছর পল্লী উন্নয়ন ও শিক্ষায় অসামান্য অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপ, আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইন্সটিটিউট প্রদত্ত বর্ষসেরা মহিলা ২০০০ এ্যাওয়ার্ড , ২০১০ সালে চ্যানেল আই কর্তৃক প্রথম নারী উপনেতা হিসেবে সম্মাননা এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১০ সালের স্বাধীনতা পদক অন্যতম। তিনি বই পড়তে এবং রবীন্দ্র সংগীত শুনতে অত্যন্ত ভালোবাসেন। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর স্বামী জনাব গোলাম আকবর চৌধুরী এমন একজন ব্যক্তি যিনি শুধু বীমা শিল্পেই নয়, ভাষা আন্দোলনে,বাংলাদেশের লায়ন্স আন্দোলনে, মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা-উত্তর বাঙলাদেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি একজন প্রতিথযশা লেখক ও কলামিষ্ট। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
0 comments:
Post a Comment