সাধারণত মডেলিং থেকে সবাই নাটকে যায়। কিন্তু সেওতির বেলায় হয়েছে ঠিক তার উল্টো। সেওতি আগে নাটক করেছেন পরে মডেলিংয়ে এসেছেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত সিক্সটি নাইন নাটকের মাধ্যমে তার মিডিয়ায় আত্মপ্রকাশ।
এ নাটকে হাসান মাসুদের বিপরীতে সেজুতির ভূমিকায় অভিনয় তাকে আজকের অবস্থান দাঁড় করিয়েছে। অথচ অভিনয়ে আগে তার হাতেখড়ি নেই। যদিও ছেলেবেলা থেকে সেওতি স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে মিডিয়ায় কাজ করবেন। মানুষ তাকে টিভি পর্দায় দেখবে, চিনবে।
তার সেই ছেলেবেলার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। তাই এখন নিজেই যখন নিজের অভিনয় টিভিতে দেখেন তখন দারুণ রোমাঞ্চিত ভাবেন নিজেকে। ভালো লাগে নিজের কাজ নিজের চোখে দেখতে। দীর্ঘ দুই বছর বিরতির পর গ্রামীণফোনের এ কাজটি করে নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী ভাবেন তিনি।
নিজের পড়াশোনা এবং সন্তানের মা হওয়ার কারণে গত প্রায় দুই বছর বিরতি দিয়েছিলেন কাজের। সামনে এমএ পরীক্ষা। তাই পরীক্ষা এবং দশ মাস বয়সী সন্তান শাহী শাহেদ সিনহাকে নিয়েই তার ব্যস্ততা। স্বামী শাহেদ ফারুক সিনহা কুয়েত এয়ার ওয়েজের প্রকৌশলী। থাকেন সেখানে।
সুযোগ পেলেই ছুটে যান স্বামী কারছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সেওতি। স্কুলে পড়াকালীন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে বিশেষ করে গানে একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন।
ছেলেবেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়া সেওতি গ্রামীণফোনের এ বিজ্ঞাপন সম্পর্কে বলেন, আমাকে অমিতাভ রেজা যেভাবে ডিকটেশন দিয়েছেন সেভাবে কাজটি করার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ডিরেক্টর যেভাবে করতে চেয়েছেন আমার কাছ থেকে তা পেয়েছেন। আমারও বিশ্বাস কাজটি ভালো হয়েছে।
ভালো লাগছে কাজটি দেখে। যেহেতু দুই বছর পর আমি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম তাই প্রথমে অনেকটা ভীত ছিলাম। এ বিজ্ঞাপনটির শুটিং হয় ২৫ মে উত্তরার কলসেন্টারে এবং পরে আরেকদিন এফডিসিতে।
সেওতির পৈতৃক নিবাস গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তবে থাকেন ঢাকার রামপুরায়। ছেলেবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন এখানে। বাবা শামসুল হোসেন অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ডিজিএম এবং মা হোসনে আরা ইআরডির ডেপুটি সেক্রেটারি।
দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। অভিনয় বা মডেলিং নিয়ে তার অভিমত হলো, আমি মডেল বা অভিনয় করছি শখের জন্য, ভালোলাগার জন্য। প্রথমে মনে হয়েছে আমি পারছি। আমার দ্বারা হচ্ছে। তাই আমি করছি।
যতদিন পারব এবং মানুষ ডাকবে ততদিন করে যাব। সামনে এমএ পরীক্ষা। পরীক্ষার পরে আমার মডেলিং ও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ব। মডেল ও অভিনেত্রী সেওতি ইতিমধ্যে একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করার অফার পেয়েছেন।
কিন্তু তিনি করেননি। করেননি এই কারণে যে, তিনি মনে করেন ওটা অনেক বড় জায়গা। ওখানে কাজ করতে গেলে অনেক সাবধানে ও হিসেব করে পথ চলতে হয়। তাছাড়া এত সময় দেওয়ার মতো সময়ও তার হাতে নেই। মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না তখন।
তবে সময় ও সুযোগমতো মডেলিং ও অভিনয় চালিয়ে যেতে চান। সিক্সটি নাইন ছাড়াও ইতিমধ্যে রঙছুট, চলছে চলবেই, লাল নীল বেগুনী, কুহুক ধারাবাহিক এবং নো ম্যান্স ল্যান্ড, যত দূরে যাও ফের দেখা হবে, প্রিয় পারভীন প্রভৃতি একক নাটকে অভিনয় করেন।
নাটকগুলোর মধ্যে রঙছুট ধারাবাহিকের নন্দিতা চরিত্রটি তার দাগ কেটে যায় এখনো। আর এ যাবৎ বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে ঢাকা ব্যাংকের বিজ্ঞাপনটির কথা মনে রেখেছেন সর্বাগ্রে। দ্বিতীয় নম্বরে রেখেছেন বর্তমানে প্রচারিত তার গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনটি।
যতটুকু এসেছেন, আসার পেছনে অ্যানীভাবী ও তার স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। একান্তই ভালোলাগা থেকে আরও ভালো কিছু করে যেতে চান। নিজের ছেলেকে নিয়ে দারুণ গর্ব করেন। আর ভবিষ্যতে তার ছেলেকে তার চেয়েও অনেক বড় সেলিব্রিটি বানানো স্বপ্ন দেখেন।
সেঁওতি সমগ্র
ডাক নাম : সেওতি
পুরো নাম : ফারিহা শামস সেওতি
জন্ম : ১৩ আগস্ট
উচ্চতা : ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি
বাবা : শামসুল হোসেন
মা : হোসনে আরা
স্বামী : শাহেদ ফারুক সিনহা
লেখাপড়া : এমএ (অধ্যয়নরত) নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সন্তান : শাহী শাহেদ সিনহা
ভাইবোন : ২ বোন ১ ভাই
অবস্থান : সবার বড়
শখ : গান শোনা
প্রিয় খাবার : শুটকি
অবসর কাটে : আড্ডা দিয়ে
সেওতি
Info Post
0 comments:
Post a Comment