মৌনিতা খান ইশানা বা ইশানার জন্ম ১৯৮৭ সালে । তার বাড়ি কুমিল্লা শহরের মনোহরপুরে তাদের সংস্কৃতিমনা পরিবার। মা নীলিমা ইসলাম শিক্ষা জীবনে ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের মহিলা সম্পাদিকা নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি গান করতেন। বাবা মাহবুব আলম খান পেশায় একজন ব্যবসায়ী হলেও তিনিও এক সময় বিভিন্ন নাট্য সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ছোট ভাই আজহার নামকরা ক্রিকেটার ছিলেন , সন্ত্রাসীদের হাতে তাকে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে।
যে ভাবে মিডিয়াতে আসলেন তিনিঃ
সবার মনেই থাকে একটি স্বপ্নঘুড়ি। নাটাইটি থাকে হাতে। যদিও সে ঘুড়ি অনেকেই ওড়াতে জানেন না। ইশানা শুধু সে ঘুড়ি ওড়াননি, উড়েছেন নিজেও। ক্লাসের শেষ বেঞ্চের ছাত্রী ইশানা। সামনের সারিতে বসার আত্মবিশ্বাসও তাঁর ছিল না। মিডিয়ায় হাতেখড়ি হলেও কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নিজেকে মাপার কথা কখনো ভাবেননি। '২০০৮-এ মীম লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার হওয়ার পর ভাবতে থাকি আমি নই কেন? কোথা থেকে যেন আত্মবিশ্বাস পেলাম। প্রস্তুত করলাম নিজেকে। পেয়ে গেলাম স্বপ্ন পূরণের প্লাটফর্ম।' বললেন ইশানা। ইশানার শুরুর গল্পটা এমনই। ২০০৯-এ লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টারে প্রথম রানারআপ হয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাস তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে শীর্ষে।
পরিবারের সবার সমর্থন পেয়েছেন সব কাজে। ইশানা বলেন, "আমার পরিবার খুব সংস্কৃতিমনা। সবার উৎসাহে আমি এত দূর আসতে পেরেছি। তাঁরা কখনোই ডিমান্ড করেননি যে, আমাকে জিততেই হবে। সব সময় বলেছেন, 'গিভ ইওর বেস্ট'।" অডিশনের মুহূর্ত থেকে বেস্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ইশানা। অডিশন দিতে এসে অনেকেই ঘাবড়ে যায়। আত্মবিশ্বাসের অভাবে পিছিয়ে পড়ে। ইশানার বিশ্বাস ছিল_তিনি পারবেন। স্থির বিশ্বাসের সঙ্গে যোগ হয়েছে কঠোর পরিশ্রম। দ্বিধায় ভুগছেন যাঁরা তাঁদের জন্য ইশানা বলেন, 'মিডিয়ায় কাজ করার বড় একটি প্লাটফর্ম এটি। তবে উপরি পাওনা, এ প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণকারীদের জীবনকে করবে সুশৃঙ্খল।'
শীর্ষর্ ২৫ নির্বাচনের পর প্রতিযোগীদের শুরু হয় গ্রুমিং পর্ব। কেমন ছিল এ পর্ব? প্রশ্নের জবাবে ইশানা জানান, ''প্রাথমিক কাউন্সেলিংয়ের পর প্রথমেই রুম খুঁজে বের করার পরীক্ষা। সেই থেকে শুরু। প্রতি পদক্ষেপে আমরা শিখেছি। শুরুতেই শিখেছি কিভাবে বসব, কিভাবে দাঁড়াব, কিভাবে হাঁটব। প্রতিদিন ইয়োগা ছিল আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। অ্যারোবিকসও শিখেছি। আমাদের শেখানো হয়েছে ড্রেস সেন্স, কালার সেন্স। প্রথম দিন থেকেই আমাদের ডায়েটের প্রতি ছিল কড়া নজর। বাংলা ও ইংলিশে সুন্দর করে কথা বলা শিখেছি। এর জন্য কঠিন বাংলা ও ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি করতে হতো আমাদের। তার মানে এই নয় যে, গ্রুমিংটা খুব বোরিং ছিল। এখানে আমরা সব ধরনের নাচ শিখেছি। মখাভিনয় ও মূকাভিনয় শিখেছি। গ্রুমিংয়ের একটা উপভোগ্য বিষয় ছিল টেবিল ম্যানারস। এক কথায় চমৎকার একটা 'টোটাল লাইফ স্টাইল' শিখেছি আমরা। সব থেকে বড় যে শিক্ষাটা আমি এখান থেকে পেয়েছি, সেটা একতা। এখন আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ আমি করতে পারব।"
অভিনয়েঃ
প্রথমবারের মতো কোন টেলিছবিতে অভিনয় করছেন এবারের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ইশানা। টেলিছবির নাম ফিরিয়ে দিলাম পৃথিবী। টেলিছবিটি নির্মাণ করছেন জনপ্রিয় নাট্য নির্মাতা তন্ময় তানসেন।
লাক্স তারকা ইশানার বড় পর্দায় সম্পৃক্ততা ঘটতে যাচ্ছে। লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হওয়ার পর এ সুন্দরী ছোটপর্দায় নিয়মিত অভিনয় না করলেও বড়পর্দায় জমকালোভাবে হাজির হচ্ছেন। তার অভিনয় করতে যাওয়া এ ছবির নাম ‘শেষ নায়ক’। ছবিটি পরিচালনা করবেন অনিকেত আলাম।
ছবির প্রস্তুতি নিয়ে ইশানা বলেন, ছবির পূর্ব প্রস্তুতির কাজ এখন চলছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ছবিটি শুরু হবে। ছবিতে আমার বিপরীতে অভিনয় করবেন কাশ্মীরের এক নায়ক। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নয়। তাই নায়কের নামটি এখনই বলা যাচ্ছে না। ছবিতে তার চরিত্রটি সম্পর্কে ইশানা বলেন, "আমার চরিত্রটি নিয়ে পরিচালক বিস্তারিত বলেননি। সংক্ষেপে বলা যায় ছবিতে আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সাধারণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করবো। আমার সঙ্গে প্রেম হয় একটি ছেলের। ছবিটি দারুণ রোমান্টিক হবে এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। প্রথমবারের মতো বড়পর্দায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন- অনুভূতি কেমন। এ প্রসঙ্গে ইশানা বলেন, আসলে আমি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম ছবিতে অভিনয় করবো। আমার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ভাল লাগছে এজন্য।"
দ্যা ডেডলক
মৌনিতা খান ইশানা
Info Post
0 comments:
Post a Comment