দান, দয়া এসবের সঙ্গে হাজী মোহাম্মদ মহসীনের নামটি প্রবাদের মতো ইতিহাস হয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে ধর্ম ও বিদ্যানুরাগীও ছিলেন তিনি।
১৭৩২ সালে হুগলির এক সম্ভ্রান্ত বণিক পরিবারে তার জন্ম। আরবি, ফারসি শিখেছেন ঘরে পণ্ডিতের কাছে। সংগীতবিদদের কাছে শিখেছেন গান এবং বিভিন্ন বাজনার তালিম। মুর্শিদাবাদে নিয়েছেন মক্তবের শিক্ষা। মধ্য বয়সে বের হন দেশ ভ্রমণে। ২৭ বছরকাল আরব, মিসর, পারস্য ভ্রমণ করে ১৭৯৪ সালে ফেরেন বঙ্গদেশে। এরপর মুর্শিদাবাদ, হুগলি ও ঢাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি ছিলেন চিরকুমার। বিশাল সহায়-সম্পত্তি নিজের সুখের জন্য ব্যয় না করে দীন-দুঃখীদের দুঃখমোচনে ব্যয় করেছেন। অকাতরে অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। হুগলি, ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে বহু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৮১৬ সালে একটি ফান্ড গঠন করে সেখানে তার সব সম্পত্তি ধর্ম ও জনহিতকর কাজের জন্য দান করেছেন। এ দানের অর্থে বহু কলেজ, মাদ্রাসা, ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফান্ডের বৃত্তির টাকায় হাজার হাজার দরিদ্র মুসলমানের শিক্ষালাভ হয়েছে। আরবি, ফারসি, উর্দু, ইংরেজি ভাষায় ব্যাপক দখল ছিল তার। অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল ইতিহাস ও বীজ গণিতে। অশ্বারোহণ ও অস্ত্র চালনায় ছিলেন পারদর্শী। নিজ হাতে রান্না করে খেতেন তিনি। মানুষকেও খাওয়াতেন। বহু নবাব-নাজেম রাজপুরুষ তার কাছে যেতেন। কিন্তু তিনি কখনো রাজদরবারে যেতেন না।
দানবীর হাজী মোহাম্মদ মহসীন ২৯নভেম্বর ১৮১২ সালের এ দিনে হুগলিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
0 comments:
Post a Comment