নবাব আলিবর্দী খাঁর কনিষ্ঠ কন্যা এবং বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার জননী আমিনা বেগম। আলিবর্দীর বড় ভাই হাজি আহম্মদের পুত্র জয়েনউদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। জয়েনউদ্দিন প্রথমে উড়িষ্যা ও পরে বিহারের সুবেদার ছিলেন। ১৭৪৮ সালে আফগান অধিপতি আহমদ শাহ দুররানী পাঞ্জাব আক্রমণ করলে নবাব আলিবর্দীর আফগান সৈন্যরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং পাটনা অধিকার করে। বিদ্রোহীরা নবাবের বড় ভাই হাজি আহম্মদ এবং জামাতা জয়েনউদ্দিনকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে।
আমিনা বেগমের তিনটি সন্তান: (১) মির্জা মুহাম্মদ সিরাজউদ্দৌলা (২) এক্রামউদ্দৌলা (৩) মির্জা মাহদী।
আমিনা বেগম এক ভাগ্যহীনা রমণী। অল্প বয়সে বিধবা হয়েছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মাতা হিসেবেও তিনি সুখ-শান্তি কিছুই ভোগ করতে পারেননি। বিশ্বাসঘাতকদের চক্রান্তে নিহত সিরাজউদ্দৌলার মৃতদেহ নিয়ে যখন একটি হাতি অগ্রসর হচ্ছিল তখন দুঃখিনী মা আমিনা বেগম পর্দাহীন অবস্থায় আলুথালু বেশে খালি পায়ে করুণ আর্তনাদসহ বুক চাপড়াতে চাপড়াতে হাতির সামনে ছুটে আসেন ছেলেকে শেষবারের মতো দেখার জন্য। কিন্তু মীর জাফরের অভদ্র রক্ষীরা তাকে কিল, চড়, ঘুষি মেরে অন্দর মহলে পাঠিয়ে দেয়।
আমিনার অন্য পুত্র এক্রামউদ্দৌলা আগেই বসন্ত রোগে মারা যান। পলাশী যুদ্ধের পর তার প্রথম পুত্র নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হলো এবং কনিষ্ঠ পুত্র মির্জা মাহদীকেও মীরনের আদেশে কাঠের পাটাতন দিয়ে চেপে চেপে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
গ্রন্থনা : তাহ্মীদুল ইসলাম
আমিনা বেগম
Info Post
0 comments:
Post a Comment