Breaking News
Loading...
Sunday, March 13, 2011

আল বিরুনি ছিলেন মধ্যযুগের বিশ্বখ্যাত আরবীয় শিক্ষাবিদ ও গবেষক। তিনি সর্বপ্রথম প্রাচ্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিশেষ করে ভারতের জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি মুসলিম মনীষীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আল বিরুনী ৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম হচ্ছে আবু রৈহান মুহম্মদ ইবন আহমদ আল বিরুনী। তবে তিনি আল বিরুনী নামে তিনি অধিক পরিচিত।

তিনি আবু নাসের ইবনে আলি ইবন ইরাক জিলানির এবং আরো কিছু বিদ্বান ব্যক্তির নিকট গণিতশাস্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করেন। অধ্যয়নকালেই তিনি তার কিছু প্রাথমিক রচনা প্রকাশ করেন। খাওয়ারিজিম (ইরানি আঞ্চলিক ভাষা) তার মাতৃভাষা হলেও তিনি তার রচনাবলি আরবিতে লিখে গেছেন। আরবি ছাড়াও তিনি ফার্সি, গ্রিক, হিব্রু ও সিরীয় ভাষাও জানতেন। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে গণিতবিদ আবু নাসের মানসুর ইবনে আলির সাথে তিনি গজনি চলে যান। গজনিতেই তার জ্ঞানচর্চার স্বর্ণযুগের সূচনা হয়। তিনি কয়েকবার সুলতান মাহমুদের সাথে উত্তর-পশ্চিম ভারতে গমন করেছিলেন। আল বিরুনী সেখানে প্রায় ১২ বছর অবস্থান করেছিলেন। এখানে সংস্কৃত ভাষা, হিন্দু ধর্ম, ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি, দেশাচার, সামাজিক প্রথা, রীতিনীতি, কুসংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হন। গণিতশাস্ত্রের ক্রিকোণোমিতি শাখায় তার অবদান সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য। তিনি ০ ডিগ্রি থেকে ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত প্রতি ১৫ ডিগ্রি অন্তর বিভিন্ন কোণের সাইন মান বের করে একটা সাইন-সারণি সাজিয়েছিলেন। এ ছাড়া ট্যানজেন্ট সারণিও তিনিই তৈরি করেছিলেন।

আল বিরুনী মোট আঠারটি বিভিন্ন মূল্যবান পাথর ও ধাতুর আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয় করেছিলেন। আর এই মানগুলো ছিল নিভর্ুল। তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে খনিজ সংগ্রহ করে তাদের বাহ্যিক ধর্ম, বাণিজিক মূল্য ও ব্যবহারিক সম্ভাবনা যাচাই করেন। পৃথিবীর আকার নিয়েও তিনি ভেবেছিলেন। প্রস্রবণের উৎপত্তি, নদী-নালা-খালের জলপ্রবাহ ইত্যাদি বিষয়েও তিনি গবেষণা করেছেন।
উলেস্নখযোগ্য বইসমূহ

তার উলেস্নখযোগ্য বইগুলো হচ্ছে_

০০ প্রাচীন জাতিদের বিষয়ক _কিতাব আল-আথার আল-বাকিয়া অনি ল-করুন আল-খালিয়া

০০ ভারতবর্ষ বিষয়ক_তারিখ আল-হিন্দ

০০ বিজ্ঞান-চিন্তা ও গবেষণার ফলাফল_আল-কানুন আল-মাসুদি

০০ ভেষজ বিষয়ক_কিতাব-ই সায়দানা।

আল বিরুনীর জ্ঞানের ভাণ্ডার ছিল অপরিসীম। ১০৪৮ খ্রিস্টাব্দে এই মহান গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিদ, চিকিৎসাশাস্ত্র বিশারদ, ভূগোলবিদ ও ইতিহাসবিদ মৃতু্যবরণ করেন।

সংগ্রহঃ ইত্তেফাক

0 comments:

Post a Comment