Breaking News
Loading...
Sunday, March 13, 2011

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল এবং কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জহুর আহমদ চৌধুরীকে ২০০১ সালে 'স্বাধীনতা পুরস্কার' (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরী ১৯১৫ সালে চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং থানার উত্তর কাট্টলীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালে তিনি অবিভক্ত ভারতের কলকাতার খিদিলপুর অঞ্চলের খ্রীষ্টান মিশনারী হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। উত্তাল বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে একজন ত্যাগী দেশকর্মী রূপে সম্পৃক্ত হওয়ায় এখানেই তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৩৮ সালে মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরী সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ছিলেন দেশের শ্রমিক রাজনীতির অন্যতম পুরোধা। ১৯৪২ সালে জহুর আহমদ চৌধুরী মুসলিম লীগের অন্যতম নেতা হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৪৬ সালে তিনি সামপ্রদায়িক দাঙ্গা বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে জহুর আহমদ চৌধুরী বৃহত্তর চট্টগ্রামে মুসলিম লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগদান করে এ দলের চট্টগ্রাম শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করায় তাঁকে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫৪ সালে আইন পরিষদের নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। জহুর আহমদ চৌধুরী ১৯৭০ সালে ' পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক লেবার ফ্রন্ট ' নামে একটি প্রগতিশীল শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সর্বসম্মতিক্রমে তিনি উক্ত সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং একই সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি সমগ্র পূর্বাঞ্চলীয় জোনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে সফলভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। জহুর আহমদ চৌধুরী ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শ্রম ও জনশক্তি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল এবং কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জহুর আহমদ চৌধুরীকে 'স্বাধীনতা পুরস্কার ২০০১' (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। এছাড়া তাঁর বড় ছেলে সাঈফুদ্দিন খালেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাউজান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালিন বিআইটি) সামনে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। তাঁর সমাধি রাউজান ইমাম গাজ্জালী কলেজের পাশে। জহুর আহমদ চৌধুরীর স্ত্রী মরহুমা ডা. নুরুন নাহার জহুর ছিলেন বিশিষ্ট লেখিকা ও সংগঠক।

লিখেছেন : খোরশেদুল আলম শামীম

0 comments:

Post a Comment