Breaking News
Loading...
Thursday, December 27, 2012

বিশিষ্ট নজরুল সংগীতজ্ঞ সোহরাব হোসেন ১৯২২ সালের ৯ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় তিনি জন্মগ্রহন করেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে নানা তমিজউদ্দিন মিয়ার কণ্ঠে- ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’ গানটি শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। নয় বছর বয়সে গান শেখা শুরু করেন রানাঘাটের সংগীত শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের কাছে।
শিখতে শিখতেই এক সময় জমিদার ক্ষীরোদ পাল চৌধুরীর নজরে পড়েন সোহরাব। কিরণ দে চৌধুরীর কাছে গান তার গান শেখার ব্যবস্থা করে দেন ক্ষীরোদ পাল।

‘মুসলমানের ছেলে’ হয়ে গানের প্রতি এই প্রেমের জন্য গালমন্দও কম শুনতে হয়নি। এক পর্যায়ে পরিবারের পক্ষ থেকে তার লেখাপড়াও বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর শিক্ষক কিরণ দে চৌধুরীর সহায়তায় কলকাতায় গিয়ে শ্রীরঙ্গম থিয়েটারে মাসে ১২ আনা বেতনে গান গাওয়ার কাজ শুরু করেন।

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের সঙ্গে পরিচয় হয় সোহরাবের। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে বলে সরকারের প্রচার বিভাগে সোহরাবকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন আব্বাসউদ্দীন।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে আব্বাসউদ্দীনের কাছে সংগীত এবং ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরুর কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নিতে থাকেন সোহরাব। পরে প্রখ্যাত শিল্পী গিরীণ চক্রবর্তী ও সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছেও নজরুলগীতি ও আধুনিক গানের তালিম নেন সোহরাব।

১৯৪৭ সালের দেশভাগের পরের বছর চলে আসেন ঢাকায়। ৪১ জিন্দাবাহার লেনের একটি বাড়িতে উঠে চাকরি নেন তথ্য অধিদপ্তরে। পাশাপাশি রেডিওতে অনুষ্ঠান এবং ছাত্র পড়ানো চালিয়ে যান।
ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ, শচীন দেব বর্মন, অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়েরও সাহচার্য পান সোহরাব হোসেন। আব্বাউদ্দীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গান করেন তিনি।
অ্যালবামে গান করার পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও প্লেব্যাক করেছেন তিনি। তার প্লেব্যাক করা চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে-মাটির পাহাড়, এ দেশ তোমার আমার, গোধূলির প্রেম, শীত বিকেল, যে নদী মরুপথে প্রভৃতি।

সংগীতে অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদক ও নজরুল একাডেমী পদকসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি এ দুটো মাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

সোহরাব হোসেন ছিলেন নজরুল-সংগীত প্রামাণীকরণ পরিষদ ও নজরুল ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডে সদস্য এবং ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
বার্ধক্যজনিত কারণে ২৭ ডিসেম্বর ২০১২ সালে সকাল ৭টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নজরুল সংগীত শিল্পী সোহরাব হোসেন। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

0 comments:

Post a Comment