Breaking News
Loading...
Wednesday, March 20, 2013

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দেশের সবকটি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিল্লুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।


জিল্লুর রহমান ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর-ভৈরব আসন থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী (এলজিআরডি) মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান তাঁর সহধর্মিণী ও মহিলা আওয়ামী লীগের তত্কালীন সভানেত্রী আইভি রহমানকে হারান।
ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হন। তখন আওয়ামী লীগের হাল ধরেন জিল্লুর রহমান।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নবম জাতীয় সংসদে জিল্লুর রহমান প্রথমে সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থতার জন্য কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। গত ২০১২এর ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।

সর্বশেষ জিল্লুর রহমান শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ৯ মার্চ, ২০১৩ রাতে ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চিকিত্সকদের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিত্সার জন্য তাঁকে ১০ মার্চ রাতে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। ১১ মার্চ সকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।

নিভে যাওয়া রাজনৈতিক অঙ্গনের এই দ্বীপশিখাটি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে প্রায় ১১ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে হেরেই গেলেন। ২০ মার্চ ২০১এর বুধবার, বিকেল চারটা পয়তাল্লিশ মিনিটে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেনইতি ঘটল স্বাধিকার ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনেরও। দীর্ঘ ৮৪ বছরের পৃথিবী পরিভ্রমণ শেষ হলো তাঁর। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে।
কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা।

0 comments:

Post a Comment