Breaking News
Loading...
Tuesday, April 9, 2013

মোহাম্মদ জহির শাহ ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে শেষ রাজা। পাশতুন সম্প্রদায়ের এ ক্ষমতাধর নেতার জন্ম ১৯১৪ সালের ১৫ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে। তার বাবা মোহাম্মদ নাদির শাহ ছিলেন বারাকজাই রাজপরিবারের সদস্য এবং তৎকালীন রাজা আমানুল্লাহ খানের প্রধান সেনাপতি। তিনি কাবুলে অবস্থিত হাবিবা হাইস্কুলে রাজকীয় সম্মানে ক্লাস করতেন। বাবার ইচ্ছামতে পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা নিতে ফ্রান্সে পাঠানো হয় তাকে। দেশে ফিরে তিনি তার বাবা এবং চাচাদের রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনায় সাহায্য করতেন। ১৯৩৩ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি রাজা শাহ হিসেবে সিংহাসনে বসেন। দীর্ঘ ৩০ বছর রাজ্য পরিচালনায় বলার মতো কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেননি তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে ১৯৩৪ সালে তার নেতৃত্বে আফগানিস্তান লিগ অব নেশনসের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৩০ সালের শেষের দিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে, বিশেষ করে জার্মানি, ইতালি এবং জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৯৭৩ সালে তিনি চোখের চিকিৎসা করতে ইতালি যান। আর এ সুযোগে তার চাচাত ভাই (যিনি আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন) মোহাম্মদ দাউদ খান ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এতে ইতালি থেকে আফগানিস্তানে তার ফেরার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৯৭০ সালের শেষদিকে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়াতে কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থা পুনরায় প্রবর্তিত হলে তিনি আফগানিস্তানে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ১৯৮৩ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পুনরায় ক্ষমতা দখলের নীলনকশা আঁকেন। কিন্তু ইসলামিক সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে আফগানিস্তান যখন তালেবানদের শাসনে চলে যায় তখন পার্লামেন্ট লয়াজিরগা চালু করতে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তবে মার্কিন বাহিনীর হাতে তালেবানদের পতন হলে দেশের প্রধান হিসেবে শাসন ব্যবস্থায় ফিরে আসতে তিনি ঘোষণা করেন- আমি আর রাজত্ব চাই না এবং লয়াজিরগার আদর্শে দেশ পরিচালনা করব। দেশের মানুষ আমাকে বাবা বলে ডাকে এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। তবে মার্কিনিদের প্রিয় হামিদ কারজাই ক্ষমতা গ্রহণ করলে তার স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি গুরুতর অসুস্থ থাকার পর, সে বছরেরই ২৩ জুলাই মোহাম্মদ জহির শাহ পরলোকগমন করেন।


সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

0 comments:

Post a Comment